ছাগলের কৃমি সংক্রমণ খুবই সাধারণ একটি সমস্যা, যা খাদ্য গ্রহণে বাধা সৃষ্টি করে, ওজন কমায় এবং মারাত্মক সংক্রমণের ফলে মৃত্যু ঘটাতে পারে।
লক্ষণ:
কৃমির ধরন অনুযায়ী লক্ষণ ভিন্ন হতে পারে। তবে সাধারণ লক্ষণগুলো হলো:
✔ অতিরিক্ত ক্ষুধামন্দা – খাবারের প্রতি আগ্রহ কমে যায়।
✔ ওজন কমে যাওয়া – শরীর দ্রুত শুকিয়ে যায়।
✔ ডায়রিয়া (পাতলা পায়খানা) – অনেক সময় রক্ত মিশ্রিত হতে পারে।
✔ পেটে ব্যথা বা অস্বস্তি – পেট ফুলে যেতে পারে।
✔ শ্লেষ্মাযুক্ত বা রক্তাক্ত মলত্যাগ – হজমতন্ত্রে কৃমির সংক্রমণের কারণে হয়।
✔ শ্বাসকষ্ট ও কাশি – ফুসফুসে কৃমি থাকলে দেখা যায়।
✔ রুক্ষ ও নিস্তেজ লোম – শরীরের পুষ্টির অভাবের কারণে লোম রুক্ষ ও বিবর্ণ হয়ে যায়।
✔ মলদ্বারের চারপাশ চুলকানো – কিছু কৃমি মলদ্বারের কাছে ডিম পাড়ে, ফলে চুলকানি হয়।
✔ পেটে পানি জমা বা রক্তস্বল্পতা (Anemia) – বিশেষ করে Haemonchus contortus সংক্রমণে।
চিকিৎসা:
ছাগলের কৃমি রোগের জন্য বিভিন্ন কৃমিনাশক ওষুধ ব্যবহার করা হয়।
কৃমিনাশক ওষুধ (Deworming Medicine):
পেটের কৃমির জন্য:
- এলবেনডাজল (Albendazole) – ৭.৫-১০ মিগ্রা/কেজি ওজন অনুযায়ী।
 - ফেনবেনডাজল (Fenbendazole) – অন্ত্রের কৃমির জন্য কার্যকর।
 
ফুসফুসের কৃমির জন্য:
- ইভারমেকটিন (Ivermectin) – ০.২ মিগ্রা/কেজি ওজন অনুযায়ী ইনজেকশন।
 
লিভারের কৃমির জন্য:
- ট্রিক্লাবেনডাজল (Triclabendazole) – লিভারের ফ্লুক কৃমি নির্মূলে কার্যকর।
 
ওষুধ খাওয়ানোর নিয়ম:
- সাধারণত প্রতি ৩-৪ মাস পরপর কৃমিনাশক ওষুধ দেওয়া উচিত।
 - সংক্রমণের মাত্রা বেশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধের মাত্রা বাড়ানো যেতে পারে।
 - অন্তঃসত্ত্বা ছাগলের জন্য নিরাপদ কৃমিনাশক ব্যবহার করতে হবে।
 
প্রতিকার ও প্রতিরোধ:
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা – ফার্মের মাটি, ঘাস ও খাবারের জায়গা শুকনো ও জীবাণুমুক্ত রাখা।
নিয়মিত কৃমিনাশক প্রয়োগ – প্রতি ৩-৪ মাস অন্তর কৃমির ওষুধ খাওয়ানো।
পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার – রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভালো খাবার নিশ্চিত করা।
দাঁড়িয়ে থাকা পানিতে ছাগলকে না রাখা – এতে লিভারের কৃমির সংক্রমণ কমবে।
নতুন ছাগল কেনার পর কোয়ারেন্টাইন – কমপক্ষে ১৫ দিন আলাদা রেখে পর্যবেক্ষণ করা উচিত।
