ভেড়া পালন বাংলাদেশের কৃষি ও পশুপালন খাতে একটি সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে বিবেচিত। এটি কম খরচে বেশি লাভজনক হওয়ায় দিন দিন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর আয় বৃদ্ধিতে এবং পুষ্টির চাহিদা পূরণে ভেড়া পালন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
ভেড়া পালনের উপকারিতা
- কম খরচে পরিচালনা: ভেড়ার খাদ্য ও বাসস্থানের খরচ তুলনামূলকভাবে কম।
 - দ্রুত বংশবৃদ্ধি: এক বছরে একাধিকবার বাচ্চা দিতে পারে।
 - বাজারে চাহিদা: মাংস, দুধ ও উলের চাহিদা রয়েছে।
 - জমির চাষের সহায়ক: ভেড়ার বিষ্ঠা জমির জন্য উন্নত সার হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
 
বাসস্থান ও পরিবেশ
- শুষ্ক, উঁচু ও বন্যামুক্ত স্থানে খামার স্থাপন করতে হবে।
 - প্রতিটি ভেড়ার জন্য ন্যূনতম ১০-১৫ বর্গফুট জায়গা রাখুন।
 - ঘরে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
 - নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে।
 
খাদ্য ও পুষ্টি
ভেড়ার প্রধান খাদ্য ঘাস। তবে খাদ্যের পুষ্টিমান নিশ্চিত করতে হলে কিছু অতিরিক্ত উপাদান যোগ করা ভালো:
- সবুজ ঘাস (নপিয়ার, বাজরার ঘাস ইত্যাদি)
 - শুকনো খড়
 - ধানের কুড়া, ভুসি ও খৈল
 - লবণ ও খনিজ মিশ্রণ
 
ভেড়াকে দিনে ২-৩ বার খাওয়ানো উচিত এবং বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা রাখতে হবে।
স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা
ভেড়ার স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিচের বিষয়গুলো মেনে চলুন:
- জন্মের পর পরই বাচ্চাদের টিকাদান করাতে হবে।
 - নিয়মিত কৃমিনাশক ও টিকাদান প্রদান করতে হবে।
 - অসুস্থ হলে দ্রুত ভেটেরিনারি ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
 - পরজীবী (পোকা-মাকড়) দমন করতে হবে।
 
জাত নির্বাচন
ভেড়া পালনের জন্য উপযুক্ত জাত নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে পাওয়া যায় এমন কিছু ভালো জাত:
- ব্ল্যাক বেঙ্গল (স্থানীয়)
 - গারোল (ভারতীয়)
 - বারবারি
 - ডোরপার (বিদেশি জাত)
 
উৎপাদনের লক্ষ্য অনুযায়ী (মাংস/দুধ/উল) জাত নির্বাচন করা উচিত।
অর্থনৈতিক দিক
প্রাথমিক বিনিয়োগ কম হলেও নিয়মিত যত্ন ও সঠিক ব্যবস্থাপনায় এক বছরে দ্বিগুণ লাভের সম্ভাবনা থাকে। ১০টি ভেড়া নিয়ে খামার শুরু করলে প্রথম বছরেই লাভজনক হওয়া সম্ভব।
