হাঁসের শরীরে বিভিন্ন ধরনের অভ্যন্তরীণ পরজীবী (Internal Parasites) বিশেষ করে গোলাকৃতি ও ফিতাকৃমি বসবাস করে, যা “কৃমি রোগ” হিসেবে পরিচিত। কৃমি হাঁসের পুষ্টি শোষণ করে, ফলে হাঁস দুর্বল হয়ে পড়ে এবং উৎপাদনক্ষমতা কমে যায়।
কৃমি রোগের লক্ষণসমূহ:
- হাঁসের ওজন কমে যাওয়া
 - খাওয়া কমে যাওয়া বা অনীহা
 - ডিম উৎপাদন কমে যাওয়া
 - পাতলা পায়খানা (ডায়রিয়া)
 - পালক নিস্তেজ ও এলোমেলো হয়ে যাওয়া
 - পেটে গ্যাস বা ফুলে থাকা
 - হাঁসের দৌর্বল্য ও মৃত্যুর হার বৃদ্ধি
 
কৃমির ধরন:
- রাউন্ডওয়ার্ম (Roundworm) – সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
 - টেপওয়ার্ম (Tapeworm) – ফিতার মতো দেখতে, হজমে সমস্যা করে।
 - ক্যাপিলারিয়া (Capillaria) – অন্ত্রে ও খাদ্যনালিতে বাস করে।
 
চিকিৎসা ও ওষুধ:
নিয়মিত ও সঠিক মাত্রায় কৃমিনাশক দিলে সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
সাধারণ কৃমিনাশক ওষুধ:
| ওষুধের নাম | ব্যবহার | 
|---|---|
| Albendazole | প্রতি কেজি ওজন অনুযায়ী 5-10 mg | 
| Levamisole | প্রতি লিটার পানিতে 1 গ্রাম | 
| Fenbendazole | 20 mg/kg ওজন অনুযায়ী | 
ডোজ ও ব্যবহারের নিয়ম পশু চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করা উচিত।
কৃমি প্রতিরোধে করণীয়:
- হাঁসের খামার ও আশপাশ পরিষ্কার রাখা
 - প্রতি ৩ মাস পরপর কৃমিনাশক দেওয়া
 - খাবার ও পানি যেন দূষিত না হয়, তা নিশ্চিত করা
 - হাঁসের চলাফেরার জায়গা শুকনো ও পরিষ্কার রাখা
 - খাঁচা বা ঘর জীবাণুমুক্ত রাখা
 - নতুন হাঁস আনার আগে কোয়ারেন্টাইনে রাখা
 
প্রাকৃতিক প্রতিকার (উপকারি):
হলুদ ও নিমপাতা: প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে।
হাঁসের কৃমি রোগ অবহেলা করলে পুরো খামার ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। তাই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সঠিক চিকিৎসা দেওয়া জরুরি। নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও যত্ন নিলেই স্বাস্থ্যবান হাঁস ও লাভজনক খামার নিশ্চিত করা সম্ভব।
পরামর্শ: হাঁসের যে কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা হলে অবশ্যই নিকটস্থ প্রাণিসম্পদ অফিস বা অভিজ্ঞ ভেটেরিনারিয়ান এর পরামর্শ নিন।
