হাঁসের কৃমি রোগ: চিকিৎসা ও প্রতিকার

হাঁসের শরীরে বিভিন্ন ধরনের অভ্যন্তরীণ পরজীবী (Internal Parasites) বিশেষ করে গোলাকৃতি ও ফিতাকৃমি বসবাস করে, যা “কৃমি রোগ” হিসেবে পরিচিত। কৃমি হাঁসের পুষ্টি শোষণ করে, ফলে হাঁস দুর্বল হয়ে পড়ে এবং উৎপাদনক্ষমতা কমে যায়।


কৃমি রোগের লক্ষণসমূহ:

  1. হাঁসের ওজন কমে যাওয়া
  2. খাওয়া কমে যাওয়া বা অনীহা
  3. ডিম উৎপাদন কমে যাওয়া
  4. পাতলা পায়খানা (ডায়রিয়া)
  5. পালক নিস্তেজ ও এলোমেলো হয়ে যাওয়া
  6. পেটে গ্যাস বা ফুলে থাকা
  7. হাঁসের দৌর্বল্য ও মৃত্যুর হার বৃদ্ধি

কৃমির ধরন:

  1. রাউন্ডওয়ার্ম (Roundworm) – সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
  2. টেপওয়ার্ম (Tapeworm) – ফিতার মতো দেখতে, হজমে সমস্যা করে।
  3. ক্যাপিলারিয়া (Capillaria) – অন্ত্রে ও খাদ্যনালিতে বাস করে।

চিকিৎসা ও ওষুধ:

নিয়মিত ও সঠিক মাত্রায় কৃমিনাশক দিলে সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

সাধারণ কৃমিনাশক ওষুধ:

ওষুধের নামব্যবহার
Albendazoleপ্রতি কেজি ওজন অনুযায়ী 5-10 mg
Levamisoleপ্রতি লিটার পানিতে 1 গ্রাম
Fenbendazole20 mg/kg ওজন অনুযায়ী

ডোজ ও ব্যবহারের নিয়ম পশু চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করা উচিত।


কৃমি প্রতিরোধে করণীয়:

  1. হাঁসের খামার ও আশপাশ পরিষ্কার রাখা
  2. প্রতি ৩ মাস পরপর কৃমিনাশক দেওয়া
  3. খাবার ও পানি যেন দূষিত না হয়, তা নিশ্চিত করা
  4. হাঁসের চলাফেরার জায়গা শুকনো ও পরিষ্কার রাখা
  5. খাঁচা বা ঘর জীবাণুমুক্ত রাখা
  6. নতুন হাঁস আনার আগে কোয়ারেন্টাইনে রাখা

প্রাকৃতিক প্রতিকার (উপকারি):

হলুদ ও নিমপাতা: প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে।


হাঁসের কৃমি রোগ অবহেলা করলে পুরো খামার ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। তাই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সঠিক চিকিৎসা দেওয়া জরুরি। নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও যত্ন নিলেই স্বাস্থ্যবান হাঁস ও লাভজনক খামার নিশ্চিত করা সম্ভব।


পরামর্শ: হাঁসের যে কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা হলে অবশ্যই নিকটস্থ প্রাণিসম্পদ অফিস বা অভিজ্ঞ ভেটেরিনারিয়ান এর পরামর্শ নিন।

Scroll to Top